শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন

শেরপুরে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার আসামী কানন মিয়া গ্রেফতার

শেরপুর প্রতিনিধি:
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২৪ Time View
শেরপুরে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার আসামী কানন মিয়া গ্রেফতার
শেরপুরে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার আসামী কানন মিয়া গ্রেফতার

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার অন্যতম আসামী মোঃ কানন মিয়া(২৫) কে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার উত্তরা ব্যাংক এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের সদস্যরা।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ কানন মিয়া (২৫) শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া গ্রামের মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, ভিকটিমের বাবা পেশায় একজন রিক্সাচালক। জীবিকার তাগিদে স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তায় বসবাস করেন। তাদের ঔরসে তিনটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে এবং তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে বিয়ে দিয়েছেন। বাদীর ছোট মেয়ে ভিকটিম শারমিন আক্তারকে একই এলাকায় মোঃ রুহুল আমিনের ছেলে মোঃ রাসেল মিয়ার সাথে প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ে দেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে শামীম নামের একজন ছেলে সন্তান জন্মগ্রহন করে।

পরবর্তীতে ৯ মাস পূর্বে ভিকটিমের স্বামী জীবিকার নির্বাহ করার জন্য মালয়েশিয়া যায়। ভিকটিমের স্বামী বিদেশে যাওয়ার পর থেকে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়া শ্বশুর বাড়ীতে থাকতো। ভিকটিম শ্বশুর বাড়ীতে থাকাবস্থায় আসামি রাজিবের সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকাবস্থায় আসামি রাজিব ও মোঃ কানন মিয়ার সাথে যুক্তি পরামর্শ করে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ীতে দেখা করতে যায়।

২০২৩ সালের ১১ আগষ্ট রাত সাড়ে ১১টায় নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান মধ্যপাড়া গ্রামে ভিকটিমের শ্বশুর বাড়ীর বসত ঘরের মেঝেতে আসামি রাজিব ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষন করার সময় আসামি মোঃ কানন মিয়া সুকৌশলে ঘরে ঢুকে তাহাদের নগ্ন অশ্লীল ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারন করে।

ওই ভিডিও চিত্র আসামি মোঃ কানন মিয়া ১নং আসামি মোঃ রাব্বির মোবাইল ফোনে পাঠায়ে দেয়। এরপর হতে আসামি মোঃ রাব্বি ও আসামি মোঃ কানন মিয়া ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান সহ কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। এরই একপর্যায়ে তাদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে ভিকটিম তার সন্তানকে নিয়া ঢাকায় চলে যায়।

পরে ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর তারিখ ভিকটিমের ছেলে সন্তানটি মারা গেলে ভিকটিমসহ সকলেই তাদের গ্রামের বাড়ীতে চলে আসেন। ৪ দিন পরে ভিকটিমকে তার দাদীর বাড়িতে রেখে বাদী তার স্ত্রীকে নিয়ে পুনরায় ঢাকায় চলে যান। এদিকে ভিকটিম বাড়ীতে থাকাবস্থায় আসামি মোঃ রাব্বি ও আসামি মোঃ কানন মিয়া ভিকটিমকে পূর্বের ধারনকৃত ভিডিও চিত্র দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে।

এমতাবস্থায় ঘটনার দিন ৯/১২/২০২৩ তারিখ বিকেল ৩ টায় আসামি মোঃ কানন মিয়া ফোন করে বলে যে, তাহাদের মোবাইল থাকা ভিকটিমের পূর্বে ধারনকৃর অশ্লীল ভিডিও চিত্র ভিকটিমের সামনে ডিলিট করে দিবে, তাই ভিকটিমকে আসামি মোঃ রাব্বির বাড়ীতে আসতে হবে। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে আসামি মোঃ কানন মিয়ার কথামতো আসামি মোঃ রাব্বির বসত ঘরে গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা আসামি মোঃ রাব্বি বসত ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে তাকে জোরপূর্বক আসামি মোঃ রাব্বির বসত ঘরের তার ইচ্ছা বিরুদ্ধে আসামিরা পালাক্রমে ধর্ষন করে।

আসামি মোঃ কানন মিয়া পূর্ব থেকে ওই ঘরের ফ্যানের উপর তার মোবাইলে ভিডিও রেকডিং চালু করে রাখে। আসামিরা ভিকটিমকে উক্ত বিষয়ে কাউকে কোন কিছু না বলার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ছেড়ে দিলে ভিকটিম বাড়ীতে চলে আসে। ভিকটিম ভয়ে ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলেনি।

পরবর্তীতে আবারো ভিকটিমের অশ্লীল ভিডিও চিত্র আসামি মোঃ রাব্বি ও আসামি মোঃ কানন মিয়া এলাকার বিভিন্ন লোকের মোবাইলে ছড়িয়ে দিলে বাদীর ছোট ভাই মোঃ নূরুল আমিন ওই ভিডিও চিত্র দেখে বাদীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানালে বাদী বাড়ীতে এসে ভিকটিমকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাহার নিকট বিস্তারিত ঘটনা শুনেন।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা নালিতাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১০ তাং- ১১/১২/২০২৩ ধারাঃ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/২০২০) এর ৯(১)/৯(৩) তৎসহ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৭) ।

ওই ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর থেকে আসামী গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে করতে থাকে।

এরই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ আবরার ফয়সাল সাদীর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল র‌্যাব-২, সিপিসি-১, মোহাম্মদপুর, ঢাকা এর সহায়তায় সোমবার সকালে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার উত্তরা ব্যাংকের সম্মুখে অভিযান পরিচালনা করে মামলার অন্যতম আসামী মোঃ কানন মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরে ধৃত আসামীকে শেরপুর নালিতাবাড়ী থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 onenewsbd24.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin